রবিবার ৫ই মে, ২০২৪ ইং ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছোট ছেলেদের সঙ্গে চেহারার মিল নাই, বড় ছেলেকে হত্যা!

আকাশবার্তা ডেস্ক : 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সন্তানের জন্ম নিয়ে সন্দেহের কারণে শিশু সায়মনকে গলা কেটে হত্যা করেছে তার বাবা বাদল মিয়া। এ হত্যাকাণ্ডের একদিন পরই রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।

রোববার (২৫ জুলাই) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার সাদাতের আদালতে শিশু সায়মনকে হত্যার কথা স্বীকার করে বাদল মিয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

এরপর আদালতের নির্দেশে বাদল মিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়।

সায়মনকে হত্যাকারী বাদল মিয়া সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের নদ্দাপাড়ার বাসিন্দা। তিনি দীর্ঘদিন সৌদি আরবে ছিলেন। বাদল মিয়ার তিন ছেলের মধ্যে সায়মন বড়। সে স্থানীয় একটি মাদরাসার ছাত্র।

এর আগে বাদল মিয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলামের কাছে শিশু পুত্রকে হত্যার কথা স্বীকার করে ১৫১ ধারায় জবানবন্দি দেন।

আদালতের বরাত দিয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম বলেন, সন্দেহের বশবর্তী হয়ে বাদল মিয়া তার ছেলেকে খুন করেছেন। গত শনিবার সকালে বাদল মিয়া তার ছেলে সায়মনকে নিয়ে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে জমিতে ঘাস কাটতে যান। এ সময় তিনি সায়মনকে গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ ধানি জমিতে ফেলে দেন। পরে সকালে বাদল মিয়া বাড়িতে এসে শিশু সায়মনকে খোঁজাখুজি শুরু করেন। একপর্যায়ে পরিবারের লোকজনকে নিয়ে বাড়ি থেকে আধা কিলেমিটার দূরে ধানি জমিতে থেকে গলাকাটা অবস্থায় শিশু সায়মনের মরদেহ খুঁজে পান।

পরে খবর পেয়ে পুলিশ শিশু সায়মনের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাদল মিয়াকে থানায় নিয়ে যায়।

ওসি এমরানুল ইসলাম আরো বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে বাদল মিয়া জানান, দীর্ঘদিন সৌদি আরবে থেকে ২০১২ সালে তিনি দেশে ফিরে এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার ভাদুঘর গ্রামের দেওয়ান পাড়ায় বিয়ে করেন। বিয়ের পর পাঁচ মাস পর তিনি পুনরায় সৌদি আরবে চলে যান। সেখানে যাওয়ার দুই মাস পর সায়মনের জন্ম হয়। এতে তার মনে সন্দেহ হয় এই ছেলে তার কিনা। সাত মাসে কি কোনো শিশুর জন্ম হয়। এসব সন্দেহ তার মনে দানা বাঁধতে থাকে।

এক বছর পর বাদল মিয়া আবারো দেশে ফিরে আসেন। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন বিয়ের আগে তার স্ত্রীর সঙ্গে বশির নামে এক ছেলের সম্পর্ক ছিলো। বাদল মিয়ার সন্দেহ হয় সায়মন বশীরের সন্তান। বিয়ের সময় তার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। সায়মনের পরে আয়মন ও নাঈম নামে তার আরো দুই ছেলের জন্ম হয়। কিন্তু সেই দুই ছেলের সঙ্গে সায়মনের চেহারার কোনো মিল নেই। এছাড়া সায়মন ছিলো একটু বেপরোয়া। সে প্রায়ই তার দুই ছেলেকে মারধর করতো। গত শুক্রবারও সে তার ছোট ছেলে নাঈমকে মারধর করে।

দুই ছেলের সঙ্গে সায়মনের চেহারার মিল না থাকায় বাদল মিয়ার সন্দেহ আরো শক্ত হয়। এসব সন্দেহের কারণে তিনি সায়মনকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী শনিবার ভোর বেলা সায়মনকে ঘুম থেকে তুলে তার সঙ্গে ঘাস কাটতে বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে জমিতে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে সায়মনকে গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ ধানি জমিতে ফেলে দেন।

     এই বিভাগের আরও সংবাদ

আর্কাইভ

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১